এবার ইসরাইল লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা চরমে। ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর একের পর এক হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়ছে ইসরাইলি বাহিনী। এরইমধ্যে মার্কিন কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দুইপক্ষের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
গাজার পাশাপাশি বিশ্ববাসীর নজর লেবাননের দিকে। হামাস ইসরাইল সংঘাত শুরুর পর থেকেই সীমান্তে হামলা-পাল্টা হামলায় জড়িয়ে পড়েছে হিজবুল্লাহ ও নেতানিয়াহু বাহিনী। তবে বেশ কিছুদিনে সীমান্ত সংঘাত আরও বেড়ে চলেছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।
এরইমধ্যে ইসরাইলের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন। বলেছেন, হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে ইসরাইলের ডোম আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন কে এমন আশঙ্কার কথা জানান তিন মার্কিন কর্মকর্তা।
তারা আরও বলেন, হিজবুল্লাহর বিপুল ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে বলে ভয় পাচ্ছে ইসরাইলও। বিষয়টি নিয়ে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মূলত, ইসরাইল স্থল ও আকাশপথে লেবাননে হামলা চালানোর হুমকি দিতে থাকার এই সময়ে বিষয়টি নিয়ে কথা উঠেছে।
হিজবুল্লাহ এরইমধ্যে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে তাদের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তর ইসরাইলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় আয়রন ডোমের ব্যাটারি নষ্ট হয়েছে। যদিও হিজবুল্লাহর সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ বেধে গেলে ইসরাইলেই সমর্থন দেবে বলে এরইমধ্যে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের’ যুদ্ধ প্রায় শেষ। এখন ইসরাইলের লক্ষ্য হিজবুল্লাহ। এমনটা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের গণমাধ্যমে দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে রোববার (২৩ জুন) নেতানিয়াহু আরও বলেন, দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে শিগগিরই স্থল অভিযান শেষ করবে তার বাহিনী।
এরপর হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য লেবাননের সীমান্তবর্তী এলাকার দিকে অগ্রসর হবে ইসরাইল। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এর মানে এই নয় যে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। হামাসকে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলতে থাকবে।
হিজবুল্লাহ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বর্তমানে হিজবুল্লাহর তৎপরতায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।’ অন্যদিকে বুধবার (১৯ জুন) এক টেলিভিশন ভাষণে হিজবুল্লাহর মহাসচিব হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, ‘যুদ্ধ শুরু হলে ইসরাইলের কোনো জায়গাই নিরাপদ থাকবে না। হামলা সবখানে হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাইপ্রাস তাদের সাহায্য করছে। তারা তাদের বিমানবন্দর ও বিভিন্ন ঘাঁটি ব্যবহার করতে দিচ্ছে ইসরাইলকে। তাই তারাও হামলা থেকে রেহাই পাবে না।’